নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেট:
সিলেট নগরীতে সিএনজি অটোরিকশার অব্যবস্থাপনা ও যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে দীর্ঘদিন ধরে যানজট, রাস্তা দখল ও জনদুর্ভোগ চলছে। এ সমস্যা নিরসনে সিলেট সিটি প্রশাসন ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) যৌথভাবে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। আগামী বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে নগরীতে আর যত্রতত্র সিএনজি পার্কিং করা যাবে না। শহরের ভেতরে মোট ৩০টি নির্ধারিত স্ট্যান্ডে কেবল সিএনজি অটোরিকশা পার্ক করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। অন্য কোথাও পার্ক করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২২ সেপ্টেম্বর থেকে সকাল ৮টা থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু হয়। প্রথম দিনেই অন্তত ২০টি অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা আটক ও ডাম্পিং করা হয়। দ্বিতীয় দিনে অভিযান আরও জোরদার করে ১০৫টি যানবাহন আটক করা হয়। এর মধ্যে সিএনজি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা, লেগুনা, ট্রাক ও পিকআপও ছিল। এসময় ৩২টি মামলা দায়ের করা হয়। দেড় দিনে মোট ১৫৩টি যানবাহন আটক এবং ৩৫টি মামলা করা হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক সারোয়ার আলম বলেন, অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা সরাতে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। এখন থেকে আর ছাড় নয়, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী জানান, শহরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অনুমোদিত স্ট্যান্ড ছাড়া অন্য কোথাও সিএনজি পার্ক করা যাবে না। কেউ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের মিডিয়া অফিসার জানান, নগরীর ট্রাফিক বিভাগ অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং প্রতিদিনই অভিযান চলবে যতদিন না শৃঙ্খলা ফেরে।
এই পদক্ষেপ নেওয়ার প্রধান কারণ হলো শহরে মারাত্মক যানজট, যত্রতত্র অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে ওঠা এবং অনুমোদন ও কাগজবিহীন যানবাহনের আধিক্য। নগরবাসীর চলাচলের স্বস্তি ফেরানো ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাই মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি অনুমোদিত স্ট্যান্ড ব্যবহারে চালকদের উৎসাহিত করা হবে।
প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী সিলেটে মোট ৩০টি নির্ধারিত সিএনজি স্ট্যান্ড থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে আম্বরখানা, টিলাগড় পয়েন্ট, মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্ট, তেমুখী, টুকের বাজার, ভার্থখোলা ক্বীন ব্রিজ, বাবনা পয়েন্ট, কদমতলী মুক্তিযোদ্ধা পয়েন্ট, হুমায়ুন রশিদ চত্বর, সামাদ চত্বর, শেখঘাট জিতু মিয়া পয়েন্ট, রিকাবিবাজার পয়েন্ট, শাহপরান মাজার গেট, মেজরটিলা ইসলামপুর বাজার, বালুচর পয়েন্ট, উত্তর কুশিঘাট, ওসমানী মেডিকেল কলেজ গেইট, ধোপাদিঘিরপাড়, কাজীটুলা বাজার, জেলরোড পয়েন্ট, শাহী ঈদগাহ পয়েন্ট, কদমতলী ওভারব্রিজ, ভার্থখালা, চন্ডিপুল, শ্রীরামপুর, জালালাবাদ গ্যাস অফিস সংলগ্ন (মেন্দিবাগ), সিসিক ২৮ নং ওয়ার্ড (মকন দোকান বাজার) এবং শিববাড়ী বাজার।
সিটি প্রশাসন ও পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, নগরে যানজট ও বিশৃঙ্খলা কমাতে অভিযান চলমান থাকবে। নির্ধারিত ৩০টি স্ট্যান্ড ছাড়া অন্য কোথাও সিএনজি পার্ক করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের আশা, এই অভিযানের ফলে নগরবাসী দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে এবং শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
